খরা ও নিবিড় চাষের যুগলবন্দী: কৃষিজমির ‘মাটির মাইক্রোবায়োম’ ধ্বংসের মুখে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা
বিশ্বব্যাপী কৃষিজমিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত খরা এবং নিবিড় চাষাবাদ পদ্ধতির সম্মিলিত প্রভাবে মাটির মাইক্রোবায়োম (Soil Microbiome) বা মাটির অণুজীবের বৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাটির এই নীরব, কিন্তু অপরিহার্য বাস্তুতন্ত্রের পতন বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাকে এক নতুন এবং গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
মাটির মাইক্রোবায়োম ফসলের পুষ্টি শোষণ, কার্বন সঞ্চয় এবং মাটির উর্বরতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন খরা পরিস্থিতি তীব্র হয়, তখন মাটির অণুজীবগুলি মারা যেতে শুরু করে। অন্যদিকে, শিল্প কৃষিতে ব্যবহৃত অতিরিক্ত সার এবং কীটনাশক এই প্রাকৃতিক অণুজীবগুলিকে বিষাক্ত করে তোলে।
‘নেচার সাসটেইনেবিলিটি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, একটি নির্দিষ্ট কৃষিজমিতে মাইক্রোবিয়াল বৈচিত্র্য হ্রাস পাওয়ায়, একই পরিমাণ সার ব্যবহার করেও ফসলের ফলন ২০% পর্যন্ত কমে গেছে।
এই প্রাকৃতিক উত্থান-পতন মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা এখন ‘রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার’ (Regenerative Agriculture) বা পুনর্জন্মমূলক চাষ পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছেন।
এই পদ্ধতিতে মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি, কম লাঙ্গল ব্যবহার এবং আচ্ছাদন ফসল (cover cropping) ব্যবহারের মাধ্যমে মাটির কার্বন ধারণ ক্ষমতা এবং মাইক্রোবিয়াল বৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করা হয়।
আন্তর্জাতিক কৃষি সংস্থাগুলি কৃষকদের এই ধরনের পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতির দিকে উৎসাহিত করার জন্য নতুন নীতি এবং আর্থিক প্রণোদনা চালু করার আহ্বান জানিয়েছে।
