করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বন্ধ রয়েছে সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। ফলে মানুষের আনাগোনা নেই। যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষের পদচারণায় ভরে থাকে সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ দর্শনার্থীর পদচারণা ঘটে দেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায়। কিন্তু এবার করোনার কারণে জাতীয় চিড়িয়াখানা বন্ধ রয়েছে। গত ২৬ মার্চ ২০২০ থেকেই মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে পারছেন না দর্শনার্থীরা। আর সে কারণে যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে খাঁচাবন্দি প্রাণীরা।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় রয়েছে ৯টি বেঙ্গল টাইগার। তরুণ বয়সের এই শেরদের জন্য দিনে ৬ কেজি করে মাংস খেতে দেয়া হয়। স্বাস্থ্যে তাই বেশ হৃস্টপুষ্টই হয়েছে কদম আর শিউলি। এছাড়া ২টি সাদা হনুমান, রেসাসসহ কয়েক প্রজাতির বানর রয়েছে এখানে। সবসময় মানুষ তাদের বিরক্ত করতো, আর এখন তারা নিজেরা নিজেরাই দুস্টমিতে ব্যস্ত।
বিলুপ্ত প্রায় ডোরাকাটা হায়েনাও যেন অনেকটা শান্ত। বন্ধের এই সময়গুলোতে লোক সমাগম না থাকায় বেশ স্বস্তিতেই রয়েছে প্রাণিগুলো। বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. নুরুল ইসলাম জানান, ‘দর্শনার্থী থাকলে ভয়ে ওরা জড়সড় হয়ে খাঁচার মাঝখানে বসে থাকতো। তারা খাবার ঠিকমতো খেত না। অনেক সময় খাবার উচ্ছিষ্ট হতো। এখন খাবার উচ্ছিষ্ট হয় না।’

চিড়িয়াখানায় বিভ্ন্নি প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে সংখ্যা সবচেয়ে বেশি চিত্রা হরিণের। এদের সংখ্যা ৩শ’র মতো। রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় মায়াহরিণও। তাদের খাদ্য বলতে সবুজ গাছ-পাতা। তৃণভোজি অন্য প্রাণীদের মধ্যে হাতি রয়েছে ৫ টি।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রাণী পুষ্টি কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘অল্প সংখ্যক হরিণ এক সময় ছিল। এখন আমাদের কিন্তু অনেক হরিণ। এক সময় আমরা একজোড়া জলহস্তি নিয়ে শুরু করি এখন কিন্তু অনেকগুলো জলহস্তি আছে।’
বনের রাজা সিংহ। সারাদিন শুয়ে বসেই কাটায়, খাচার ভেতর। অনেকদিন কারো দেখা না মেলায় ক্যামেরা দেখে বেশ দৌড়ে এলেন তিনি। তিনটি স্ত্রী সিংহ নিয়ে একটি পুরুষ সিংহের বাস এখানে।
১৯১ প্রজাতির ২ হাজারের বেশি প্রাণী রয়েছে এই জাতীয় চিড়িয়াখানায়। এছাড়া বক জাতীয় পাখি রয়েছে ৬০ প্রজাতির। এদের মধ্যে বিলুপ্ত প্রায় পাখি রয়েছে হারগিলা, মদনটাক, শকুন। করোনাকালে মানুষের কোলাহল না থাকায় নিশ্চিন্তে নীরবে সময় কাটছে তাদের।