নদী দূষণের গভীর প্রভাব: ডলফিন ও মানুষের স্বাস্থ্য একই সূত্রে বিপন্ন, পরিবেশ উপদেষ্টার সতর্কতা
বাংলাদেশে নদী দূষণ এখন কেবল পরিবেশগত ক্ষতি নয়, এটি ডলফিন এবং মানুষের স্বাস্থ্যের উপর এক গুরুতর এবং সমান্তরাল ঝুঁকি তৈরি করছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সতর্ক করে বলেছেন যে, শিল্প বর্জ্য এবং অপরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন নদীর জলকে বিষাক্ত করে তুলেছে, যার কারণে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন এবং নদী তীরবর্তী জনগোষ্ঠী উভয়ই একই ধরনের স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছে।
নদীতে অতিরিক্ত পরিমাণে ভারী ধাতু (Heavy Metals), প্লাস্টিক এবং শিল্প রাসায়নিকের উপস্থিতি জলজ প্রাণীর খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করছে। ডলফিনের মতো শীর্ষ শিকারি প্রাণীর দেহে এই বিষাক্ত উপাদানগুলির ‘বায়োঅ্যাকুমুলেশন’ (Bioaccumulation) ঘটছে।
এর ফলে তাদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ঠিক একইভাবে, নদী বা নদী-সংলগ্ন জলাধারের মাছ ও পানি ব্যবহারকারী মানুষেরাও দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকি, যেমন ক্যান্সার এবং স্নায়ুতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এই সংকট মোকাবিলায় পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুদূষণকারী অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাস্টিক জব্দ করার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল অভিযান যথেষ্ট নয়।
প্রয়োজন কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধন প্ল্যান্ট (Central Effluent Treatment Plants – CETP) স্থাপন এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর কঠোর নজরদারি। এছাড়াও, জনবান্ধব স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যমতের আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে নদীগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ থাকে।
