27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ১০:৩৮ | ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
বুড়িগঙ্গা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না
পরিবেশ রক্ষা

বুড়িগঙ্গা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না

বুড়িগঙ্গা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না

রাজধানীর প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, শিল্পকারখানা ও নৌযানের বর্জ্যে পানি দূষণের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

হাজার হাজার টন বর্জ্য ফেলে নদীটি একটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। হারিয়ে গেছে জলজ প্রাণী ও মাছ। পানির উৎকট দুর্গন্ধ ছাড়াও দূষণের প্রভাবে দুই পারের বাসিন্দারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বর্জ্যে নদীর তলদেশে ১০ ফুট ভরাট হয়ে গেছে।



সরেজমিন দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীতে বছরের পর বছর হাজার হাজার টন বর্জ্য নিক্ষেপ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুই সংস্থা ঢাকার ওয়াসা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এক হিসাবে সংস্থা দুটির ড্রেনের মাধ্যমে প্রতিবছর বুড়িগঙ্গায় অন্তত ২৫ হাজার টন বর্জ্য পড়ে থাকে।

নদীতীরের শিল্পকারখানাগুলো থেকে আরও ১০ হাজার টন বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া নৌযান থেকে উপর্যুপরি পোড়া তেলসহ নানা বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। বুড়িগঙ্গার দুই তীরে ইটভাটাসহ কয়েক হাজার শিল্পকারখানা রয়েছে।

শুষ্ক মৌসুম শুরু হতেই নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা চর্ম-হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।

নদীপারের কয়েক’শ কারখানা থেকে রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য ও ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের ড্রেনেজ বর্জ্য নদীর পানিতে মিশে পানি কুচকুচে কালো, তীব্র দুর্গন্ধ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে।

মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে জলজ প্রাণী ও মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন। সিংহভাগ বর্জ্য দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানের। বুড়িগঙ্গা নদীর কয়েক’শ পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের শত শত টন বর্জ্য পরিশোধন ছাড়া নদীতে নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, ইসলামবাগ, পোস্তা, লালবাগসহ নদীর পার এলাকায় অবস্থিত কয়েক’শ পলিথিন ও প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানা, পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জের দুই শতাধিক ড্রাইং কারখানাসহ হাজারেরও বেশি কারখানা এবং শ্যামপুর, পাগলা-ফতুল্লা এলাকায় শত শত কারখানা থেকে কেমিক্যালমিশ্রিত পানি নদীতে মিশে দূষিত হচ্ছে।

বছরের পর বছর এসব প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার টন বর্জ্য নদীতে নিক্ষেপ করলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নির্বিকার রয়েছে। তাছাড়া দুই পারের বাসিন্দারা নদীর তীরে আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে। ইতোমধ্যে বুড়িগঙ্গা নদী দূষণের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ মাত্রা অতিক্রম করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ড্রেনেজ বর্জ্য পরিশোধনের পর নদীতে নিক্ষেপের বিধান থাকলেও এখন পর্যন্ত ঢাকায় বর্জ্য ট্রিটম্যান্টের জন্য কোনো তরল বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করতে পারেনি ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। উপরন্তু নারায়ণগঞ্জের পাগলায় অবস্থিত ওয়াসার একমাত্র ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্টটি কয়েক বছর ধরে অকেজো রয়েছে।

চর কালীগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী আলী, আবুল হোসেন, জসিম উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, নদীর পানির অসহনীয় দুর্গন্ধে এখানকার মানুষ দিশেহারা। নদীর পাড় থেকে দুর্গন্ধ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া কাশি, শ্বাসকষ্ট, বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ সব সময় লেগেই থাকে। বেশি সমস্যায় পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) আহ্বায়ক আবু নাসের খান বলেন, বুড়িগঙ্গার পরিবেশ বাঁচাতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে।

এসব উদ্যোগের মধ্যে পরিবেশ ও নদীতে দূষিত বর্জ্য নিক্ষেপকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠান দূষণ করছে, তাদেরও দূষণ রোধে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য ট্রিটম্যান্ট করতে কয়েকটি প্ল্যান্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রকল্পগুলো সমাপ্ত করতে ওয়াসা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।



এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈমকে বারবার ফোন ও খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাতে তিনি সাড়া দেননি।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, শিল্পকারখানার পাশাপাশি ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন নদীতে বর্জ্য ফেলে অপরাধ করে যাচ্ছে।

১০ বছর আগে সুয়ারেজ বর্জ্য পরিশোধনে তারা প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তবে ওইসব প্রকল্পের কোনোটিই আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে নদী দূষণের ফলে জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নদীপারের মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। নদীকে দূষণমুক্ত করতে যা করা প্রয়োজন, সবই করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত