বিশ্বের ৬১টি শহরের মধ্যে বিপজ্জনক মিথেন গ্যাসে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটার ১৬ এপ্রিল একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিশ্বের ৬১টি শহরের ওপর করা ওই গবেষণা অনুযায়ী মিথেন গ্যাস নির্গত হওয়া শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার কয়েকটি ভবনে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস-সংযোগের ছিদ্র দিয়ে বের হওয়া মিথেন গ্যাসের কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আর গবেষণা বলছে, ঢাকার বায়ুমণ্ডলেও বিপজ্জনক ওই গ্যাসের একটি স্তর তৈরি হয়েছে। বিশ্বের ৬১টি শহরের ওপর করা ওই গবেষণা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি মিথেন গ্যাস নির্গত হয়-এমন শহরের শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি, এরপরই ঢাকার অবস্থান।
প্রাকৃতিক গ্যাসের অন্যতম উপাদান হলো মিথেন গ্যাস। ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভূ-উপগ্রহ থেকে নেওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি করা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে মোট ৮৮৭ দিন ঢাকার বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতির ছবি নেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ঢাকার বায়ুমণ্ডলে ওই সময়ের মধ্যে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়েছে ২১ দশমিক ১ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন)। আর পাকিস্তানের করাচি শহরে ঢাকার চেয়ে সামান্য বেশি, ২২ দশমিক ৫ পিপিবি।
ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে শহর এলাকায় উচ্চমাত্রায় মিথেন গ্যাস নিঃসরণের কারণ অনুসন্ধান এবং এর সঙ্গে অপরিশোধিত বর্জ্যপানির সম্পর্ক নিয়ে এই গবেষণায় বিশ্বের উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত-তিন ধরনের দেশের শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়, সেইন্ট লুইস বিশ্ববিদ্যালয়, উইসকনসিন স্টেট ল্যাবরেটরি অব হাইজিন ও নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে গবেষণাটি করেছেন।
গবেষক দলের প্রধান উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক জেমস জে শাওয়ার বলেন, ‘এত দিন বিশ্বে মিথেন গ্যাসের প্রধান উৎস হিসেবে কৃষিকাজ ও গ্রামীণ জলাভূমিগুলোকে মূলত দায়ী করা হতো।
আমাদের এই গবেষণায় বিশ্বের ৬১টি শহরে বিভিন্ন মাত্রায় মিথেন গ্যাস সৃষ্টির পেছনে গ্যাস-সংযোগের ছিদ্র, বর্জ্য ও বর্জ্যমিশ্রিত পানির ভূমিকাকে চিহ্নিত করেছি। মিথেন গ্যাসের এসব উৎস শহরের বাতাসকে বিপজ্জনক করে তুলছে। একই সঙ্গে তা বিশ্বের তাপমাত্রাও বাড়াচ্ছে।’