জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কমে যায় জিডিপি, দুর্বল হয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনেক বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে যায় , অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়, জীবিকার সংকট ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পায়।
রাজধানীতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে এক আন্তর্জাতিক কর্মশালায় তুলে ধরা গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। সোমবার রাজধানীর এক হোটেলে এ কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (বিসিএএস)।
এ কর্মশালায় জলবায়ু বিপন্ন দেশগুলোর ক্ষতির ধরন ও অভিযোজন চাহিদা নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা দ্য ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি মনিটর (সিভিএম) গবেষণালব্ধ ফলাফল তুলে ধরে। এর আগে সিভিএমের দুটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে এবং এবারের গবেষণাটি তৃতীয়।
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘ভিটোয়েন্টি’ এবং সহযোগী সংগঠনসমূহ এ গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণার ফলাফলে বিশ্বের অন্যান্য বিপন্ন দেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জলবায়ু বিপন্নতা ও অভিযোজন চাহিদার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বিসিএএসের নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমান কর্মশালা সঞ্চালনা করেন। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন ভিটোয়েন্টির গ্লোবাল লিড অ্যাডভাইজার সারা আহমেদ ও সুমাইয়া বিনতে সেলিম।
প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ইক্যাড) উপপরিচালক অধ্যাপক মিজান আর খান। সিভিএম প্রতিবেদনের তথ্যপ্রাপ্তি এবং তার ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন নেদারল্যান্ডসের ক্লাইমেট মিডিয়া ফ্যাক্টরির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বার্নাড হেজেল।
গবেষণা ফলাফলের গুরত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরে সারা আহমেদ বলেন, সারা বিশ্বে প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান দুটি নিয়ামক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টির ধরনে পরিবর্তনের ক্ষতির বিষয়টি অনুভব করেন এবং বুঝতে পারেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভৌগোলিক ও আর্থসামাজিক অবস্থানের কারণে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ভিটোয়েন্টিভুক্ত ২০টি সর্বাধিক বিপন্ন দেশের ক্ষেত্রে জলবায়ু দুর্যোগের ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি।
এবারের গবেষণা প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রামক ব্যাধির বৃদ্ধির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। যথাযথ অভিযোজন ও জলবায়ুতে অর্থায়ন না করা হলে দেশগুলোর বিপন্নতা আরও বাড়বে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন ব্র্যাকের হেড অব ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড গোলাম রাব্বানি, বিসিএএসের ফেলো দ্বিজেন মল্লিক, আইনজীবী হাফিজুল ইসলাম খান, নেপালের প্রতিষ্ঠান পিআরসির পরিচালক প্রবীণ মানসিং, প্রতিষ্ঠানটির ক্লাইমেট পলিসি অ্যানালিস্ট বিমল রেগমী।