অল্প দিনের ব্যবধানে সবুজের সমারোহ ‘বাঁশবাড়ি কলোনি’
জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো। বলছি ময়মনসিংহ নগরীর বাঁশবাড়ি কলোনির কথা। এটি ময়মনসিংহ নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। বাহারি ফুল ও সবুজ গাছপালা দিয়ে ভরে উঠেছে ময়মনসিংহ নাগরির বাঁশবাড়ি কলোনির চিত্র। কিছুদিন আগেও ময়লা–আবর্জনার জন্য এই কলোনিকে সবাই বস্তি হিসেবে চিনত।
আবর্জনার স্তূপ হিসেবে পরিচিত থাকলেও রাতারাতি এই কলোনির পরিবর্তন এনে দিয়েছেন কয়েকজন তরুণ। যার সুবিধা ভোগ করছে এখন পুরো এলাকাবাসী।
নান্দনিক সুরভি ছড়াচ্ছে এখন পুরো এলাকা। এখানে তুলনামূলক পিছিয়ে পড়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। বাসাবাড়িগুলোও কিছু দেয়ালের আর অধিকাংশই টিনের। নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে তিন শতাধিক পরিবারের হাজারের বেশি মানুষের বসবাস।
একসময় চলাচলের জন্য এই এলাকা এড়িয়ে চললেও পথচারীদের জন্য এখন এই এলাকা হয়ে উঠেছে প্রশান্তির। একটি সুন্দর উদ্যোগ কীভাবে একটি এলাকাকে বদলে ফেলতে পারে, বাঁশবাড়ি কলোনি তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
সিটি করপোরেশন থেকে এই কলোনির রাস্তা ও নালার কাজ করে দেওয়ার পর একদল তরুণ নেমে পড়েন সবুজায়নে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে সবুজে সবুজ হয়ে উঠেছে এই কলোনি।
সড়কের দুই পাশের দেয়ালগুলো সাজানো হয়েছে গাছে গাছে। দেয়ালে তারকাঁটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে হরেক রকমের বাহারি ফুল, যা এখন ভার্টিক্যাল গার্ডেন নামে পরিচিতি পেয়েছে মানুষের কাছে।
এই ভার্টিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে হাসনাহেনা, জবা, জুঁই, বেলি, কাঠমালতি, বাগানবিলাসসহ নানা রকম ফুল, ফল ও ভেষজ গাছ। তা ছাড়া এসব গাছ তাদের বাড়ির পাশে ও ছাদেও দেখতে পাওয়া যায়।
গাছ ও টব কেনা থেকে শুরু করে দেয়ালে রংও তারা করেছে। যার দরুন এলাকার শোভা আরও বর্ধিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে সুষ্ঠু পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে, তাই তাদের এই পদক্ষেপ নেওয়া।
দীর্ঘদিনের অপরিচ্ছন্ন নোংরা কলোনি এখন আবর্জনামুক্ত। এখন এ কলোনির পরিবেশ নিয়ে শিশুরা যেমন আনন্দিত, তেমনি বড়রাও অনেক খুশি।
এই নান্দনিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকাগুলোতেও। এই নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিনই মানুষের ভিড় বাড়ছে।
তরুণদের এই উদ্যোগ শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয় বলে মনে করছে আশপাশের এলাকাবাসীও। এই উদ্যোগ ধরে রাখতে হবে এবং আগামী প্রজন্ম যাতে সবুজ নির্মল পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে, এদিকে নজর দিতে হবে।
গাছপালা হলো পরিবেশের প্রাণ। দেশের প্রতিটি প্রান্তে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এমন উদ্যোগ নিলে পরিবেশ রক্ষায় এই ঘরোয়া বৃক্ষরোপণই পারে আমাদের সবুজ পরিবেশকে আবার ফিরিয়ে দিতে।