কার্বন ক্যাপচার (Direct Air Capture) : অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হতে চলেছে ‘কার্বন-ডাইরেক্ট এয়ার ক্যাপচার’
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় একসময় ব্যয়বহুল এবং কাল্পনিক বলে বিবেচিত প্রযুক্তি—বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি কার্বন ডাই-অক্সাইড টেনে নেওয়ার পদ্ধতি ডাইরেক্ট এয়ার ক্যাপচার (Direct Air Capture – DAC) এখন আর কেবল একটি পরীক্ষামূলক ধারণা নয়।
নতুন উদ্ভাবন, স্কেল-আপ প্রকল্প এবং বিশাল রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি এখন বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ার দোরগোড়ায়। ক্যাপচার করা এই কার্বনকে শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা বা ভূগর্ভে নিরাপদে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে এটি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে।
DAC প্রযুক্তিটি বায়ুমণ্ডলের বাতাসকে বিশাল ফিল্টারের মাধ্যমে টেনে নেয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডকে রাসায়নিকভাবে আলাদা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি (DOE)’-এর তথ্যানুযায়ী, এই প্রযুক্তি স্থাপনা এবং পরিচালনার খরচ গত পাঁচ বছরে প্রায় ৪০% কমে এসেছে।
সরকারগুলি, বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে, এই প্রযুক্তিতে বিপুল বিনিয়োগ করছে। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকান ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিল এই প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণের জন্য বিলিয়ন ডলারের কর সুবিধা এবং সরাসরি ভর্তুকি প্রদান করেছে, যার ফলে বিশ্বের বৃহত্তম DAC হাবগুলি তৈরি হচ্ছে।
এই প্রযুক্তির উত্থান জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক শিল্পগুলিকে ডিকার্বনাইজ করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ‘সেতু’ হিসেবে কাজ করতে পারে। সিমেন্ট, ইস্পাত এবং রাসায়নিকের মতো শিল্পগুলি, যেখানে কার্বন নির্গমন কমানো কঠিন, তারা ক্যাপচার করা কার্বনকে তাদের উৎপাদনে পুনরায় ব্যবহার করতে পারবে।
সুইস স্টার্টআপ ‘কার্বন ক্যাপচার টেকনোলজিস’ দাবি করেছে যে, তারা ক্যাপচার করা কার্বন ব্যবহার করে এমন একটি সিন্থেটিক জ্বালানি (synthetic fuel) তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে জেট ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই অর্থনৈতিক সম্ভাবনাই প্রযুক্তিটিকে কেবল পরিবেশগত হাতিয়ার নয়, বরং একটি লাভজনক শিল্পে পরিণত করেছে।
