লেজার স্যাটেলাইট ও এআই-এর যুগলবন্দী: অ্যান্টার্কটিক মহাসাগরের শীতকালীন কার্বন নিঃসরণ ফাঁস
বৈশ্বিক জলবায়ু মডেলগুলির একটি দীর্ঘদিনের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে অত্যাধুনিক লেজার স্যাটেলাইট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বিশ্লেষণের মাধ্যমে।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টার্কটিকার চারপাশের দক্ষিণ মহাসাগর (Southern Ocean) শীতকালে বিজ্ঞানীরা আগে যা অনুমান করতেন, তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) বায়ুমণ্ডলে নির্গত করে। এই বৈপ্লবিক আবিষ্কার জলবায়ু পরিবর্তনের পূর্বাভাস এবং কার্বন বাজেট (Carbon Budget) পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করেছে।
দক্ষিণ মহাসাগর পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাকৃতিক কার্বন শোষক (Carbon Sink) হিসেবে পরিচিত। তবে শীতকালে মেরু অঞ্চলের দীর্ঘ অন্ধকার এবং বরফের কারণে এই মহাসাগরের ভূমিকা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হতো না।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ‘নেচার জিওসায়েন্স’ জার্নালে রিপোর্ট করেছেন যে, তারা লেজার স্যাটেলাইট ডেটা এবং এআই অ্যালগরিদম ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো মেরু অন্ধকার ভেদ করে শীতকালীন কার্বন ফ্লাক্স (Carbon Flux)-এর চিত্র উন্মোচন করেছেন। এই ডেটা দেখায় যে, শীতকালে বরফ গলে যাওয়ার কারণে সমুদ্রের গভীর থেকে CO2 সমৃদ্ধ জল উপরে উঠে আসে, যা বায়ুমণ্ডলে বিশাল পরিমাণে কার্বন ছেড়ে দেয়।
এই তথ্য বৈশ্বিক জলবায়ু মডেলগুলিতে একটি বড় ফাঁক পূরণ করছে। শীতকালে দক্ষিণ মহাসাগরের এই অপ্রত্যাশিত কার্বন নিঃসরণ প্রমাণ করে যে, মানবসৃষ্ট নির্গমনের কারণে মহাসাগরগুলি উষ্ণ হতে থাকলে, তাদের কার্বন শোষণ করার ক্ষমতা কমে যাবে এবং তারা নিজেরাই কার্বন নির্গমনের উৎসে পরিণত হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এখন দ্রুত এই নতুন তথ্যগুলিকে আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনা, বিশেষ করে আসন্ন COP30 সম্মেলনে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
