জলবায়ু অর্থায়নের ব্যবধান পূরণে পদক্ষেপ: বাংলাদেশ শুরু করল প্রথম ‘জাতীয় জলবায়ু অর্থায়ন কৌশল’ প্রণয়নের কাজ
জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার জলবায়ু সহনশীলতা (Climate Resilience) জোরদার করার লক্ষ্যে এক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP)-এর সহযোগিতায় দেশের প্রথম ‘জাতীয় জলবায়ু অর্থায়ন কৌশল’ (National Climate Finance Strategy) প্রণয়নের জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই উদ্যোগটি এমন এক সময়ে এল যখন COP30 সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়নে ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
যদিও বাংলাদেশ বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের মাত্র ০.৫৬ শতাংশের জন্য দায়ী, তবুও জলবায়ু সম্পর্কিত বিপদ মোকাবিলার জন্য দেশটির বার্ষিক প্রায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের প্রয়োজন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত পরামর্শ দিয়েছেন, কার্যকর জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার (NAP) পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, শক্তিশালী সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর জরুরি।
এই কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে লক্ষ্য হলো পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সংস্কার, নিয়ন্ত্রক সুবিধা এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে একত্রিত করে এই বিশাল অর্থায়নের ব্যবধান পূরণ করা।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই জলবায়ু কার্যক্রমে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, কিন্তু ঘাটতি এখনও বিশাল। এই নতুন কৌশলটি সবুজ বন্ড, সাসটেইনেবিলিটি-লিংকড ঋণ এবং জন-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মতো নতুন উৎসের মূলধন ব্যবহার করে অর্থায়নকে আরও সুনির্দিষ্ট, নির্ভরযোগ্য এবং বৈচিত্র্যময় করতে সাহায্য করবে।
এটি জলবায়ু-সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য দেশের নীতিগত কাঠামোকে আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সংযুক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
