গভীর সমুদ্র খনন নিয়ে তুমুল বিতর্ক: নীল তিমি এবং অন্যান্য বিপন্ন প্রজাতির জীবন বিপন্ন
ইলেকট্রিক গাড়ি ও গ্রিন টেকনোলজির জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সংগ্রহের তাগিদে গভীর সমুদ্রের তলদেশে খনন (Deep-Sea Mining) শুরু করার সম্ভাবনা বিশ্বজুড়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, এই খনন কাজ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপর অপুনরাবর্তনযোগ্য (irreversible) ক্ষতি ঘটাতে পারে এবং বিশেষ করে নীল তিমির মতো বিপন্ন প্রজাতির জীবন বিপন্ন করে তুলতে পারে।
গভীর সমুদ্র খনন প্রক্রিয়া থেকে সৃষ্ট উচ্চ এবং স্থিতিশীল শব্দ নীল তিমি, ডলফিন এবং পোরপয়েজ-এর মতো সামুদ্রিক মেগাফাউনোর (Megafauna) যোগাযোগের ফ্রিকোয়েন্সিকে ব্যাহত করতে পারে। বিজ্ঞানীরা ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেরিন সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উল্লেখ করেছেন যে, এই শব্দের কারণে তিমি ও তাদের শাবকদের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে, তাদের খাদ্যের সন্ধান ব্যাহত হতে পারে এবং দ্রুত জলের উপরে উঠে আসতে বাধ্য করতে পারে।
এই ধরনের আঘাত ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তন এবং মাছ ধরার জালে আটকে যাওয়ার মতো চাপ দ্বারা বিপন্ন প্রজাতিগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।
সুইডেনের মতো বেশ কয়েকটি দেশ এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং খনন কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ জারি করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা জোর দিয়েছে যে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় খনিজগুলি একটি ‘সার্কুলার ইকোনমি’ (Circular Economy) এবং কম উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমেও অর্জন করা সম্ভব।
সমুদ্রের প্রায় ৯০% এখনও অনাবিষ্কৃত থাকা সত্ত্বেও, বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন যে, সীমিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ভিত্তিতে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক শিল্প শুরু করাটা একটি ভুল সিদ্ধান্ত হবে, যা বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন শোষক সমুদ্রের স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলবে।
