সমুদ্রের পানিকে কার্বন সিঙ্ক এবং জ্বালানি উৎসে রূপান্তর: ‘ইকোয়াটিক টেকনোলজি’র যুগান্তকারী উদ্ভাবন
পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক বিশাল উদ্ভাবন এসেছে ‘ইকোয়াটিক টেকনোলজি’ (Equatic Technology) নামক একটি স্টার্টআপ থেকে, যা সমুদ্রের পানিকে সরাসরি সবুজ হাইড্রোজেন জ্বালানি (Green Hydrogen) এবং স্থায়ী কার্বন সংরক্ষণের (Permanent Carbon Storage) উৎসে রূপান্তর করছে। এই প্রযুক্তি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সমুদ্রের পানিকে হাইড্রোজেন এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডে বিভক্ত করে।
এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে না দিয়ে, সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত থাকা কার্বনকে কঠিন, অবিচ্ছিন্ন সামুদ্রিক খনিজে (solid ocean minerals) পরিণত করে।
এই খনিজগুলি সমুদ্রের তলদেশে স্থায়ীভাবে কার্বনকে আবদ্ধ রাখে। এর ফলে একইসাথে পরিষ্কার জ্বালানি তৈরি হয় এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ হয়। এই উদ্ভাবনটি কার্বন অপসারণ প্রযুক্তি (CDR) এবং ক্লিন এনার্জি—দুটি ক্ষেত্রেই যুগান্তকারী বলে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রচলিত কার্বন অপসারণ প্রযুক্তির তুলনায় ইকোয়াটিকের এই প্রযুক্তিটি কম ব্যয়বহুল এবং এর জন্য কোনো নতুন অবকাঠামো বা পানীয় জলের প্রয়োজন হয় না, যা এটিকে শুষ্ক বা জল-সংকটপূর্ণ অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য একটি আদর্শ সমাধান করে তুলেছে।
বৈশ্বিক এয়ারলাইন কোম্পানি বোয়িং (Boeing) এবং ফিনটেক জায়ান্ট স্ট্রাইপ (Stripe)-এর মতো বৃহৎ শিল্প সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই এই কার্বন অপসারণ ক্ষমতা কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এই প্রক্রিয়ার ফলে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপর সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন।
