জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার বন্যপ্রাণীর ‘জেনেটিক ম্যাপিং’ শুরু
জলবায়ু পরিবর্তন এবং বনভূমি ধ্বংসের কারণে অস্তিত্বের সংকটে থাকা বন্যপ্রাণীদের রক্ষা করতে, দক্ষিণ এশিয়ার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংস্থাগুলি এখন ‘জেনেটিক ম্যাপিং’ (Genetic Mapping)-এর একটি বিশাল আঞ্চলিক প্রকল্প শুরু করেছে।
এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বাঘ, হাতি, এবং গাঙ্গেয় ডলফিনের মতো বিপন্ন প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য (Genetic Diversity) চিহ্নিত করা, যাতে পরিবর্তিত জলবায়ুতে টিকে থাকার জন্য তাদের অভিযোজন ক্ষমতা (Adaptability) বোঝা যায়।
ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা একত্রিত হয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর রক্ত, চুল বা মল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তাদের ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করছেন।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN)-এর অর্থায়নে পরিচালিত এই গবেষণাটি আশা করা হচ্ছে যে, কোন প্রাণীগুলি তাপপ্রবাহ, নতুন রোগ এবং সীমিত খাদ্যের মতো চরম পরিবেশগত চাপ সহ্য করতে সক্ষম—সেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে। এই ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতের সংরক্ষণ প্রচেষ্টা আরও লক্ষ্যভিত্তিক করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানীরা এই জেনেটিক ডেটা ব্যবহার করে বরেণ্য প্রজাতির জন্য ‘ক্লাইমেট করিডোর’ (Climate Corridors) বা জলবায়ু পথ চিহ্নিত করবেন, যা প্রাণীগুলিকে তাদের পরিবেশগত সহনশীলতার উপর ভিত্তি করে নিরাপদ আবাসস্থলের দিকে স্থানান্তরিত করতে সহায়তা করবে।
এই উদ্যোগটি প্রমাণ করে যে, প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য এখন কেবল আবাসন সুরক্ষা নয়, বরং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োইনফরম্যাটিক্সের মতো অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এই তথ্য আঞ্চলিক জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা এবং জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার নীতি প্রণয়নে সহায়ক হবে।
