সোমেশ্বরী নদীর এখন আর নদী বলে অস্তিত্ব নেই: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বালুমহাল ইজারা দেওয়ার নামে সোমেশ্বরী নদী হত্যা করা হয়েছে।
এখন আর নদী বলে অস্তিত্ব নেই নেত্রকোনার সোমেশ্বরীর। নদীটিকে বালুমহালে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। নদীর বুকে শত শত ড্রেজার। এসব অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে তিনি সোমেশ্বরী নদীর বিভিন্ন বালুমহাল পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদী দেখতে এসে আমি তো কোনো নদী দেখলাম না। একটা ক্ষীণ জলধারা দেখলাম মাত্র। আর সবখানে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন দেখলাম। ময়মনসিংহ থেকে আসার পথে শুধু বালুভর্তি ট্রাক আর ট্রাক দেলাম।
শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের স্থানে স্থানে সাইনবোর্ডে লেখা আছে ওভারলোডেড ট্রাক চলবে না, আর ভেজা বালুভর্তি ট্রাক চলবে না। কিন্তু আমি যতগুলো ট্রাক দেখেছি, সবগুলোই ওভারলোডেড ও ভেজা বালুভর্তি।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, যেহেতু এখানে প্রচুর বালু আসে, নদী ব্যবস্থাপনার সঙ্গে কিছু বালু হয়তো তোলারও প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু বালুমহাল হিসেবে ঘোষণা করে বেসরকারি খাতকে দিয়ে বালু উত্তোলন করলে এই নদীকে আর কখনোই নদী হিসেবে ফেরত পাওয়া যাবে না।
এটাকে বালুর খনি হিসেবেই তারা ব্যবহার করবে। কাজেই এই নদীর গভীরতা ঠিক রাখতে সরকারি পর্যায়ে পরিকল্পনা করে খননের কাজ করা যেতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই এই নদীকে বালুমহাল হিসেবে ঘোষণা করে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বালু এখন তাঁদের দুঃখের বড় কারণ। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দিন-রাত মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন করলেও কাজ হচ্ছে না।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল আহসান বলেন, উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার ও ভেজা বালুভর্তি ট্রাক-লরিকে জরিমানা করেন।
এ ছাড়া সম্প্রতি পৌর শহরের ভেতর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ, হর্ন না বাজানো, ভেজা বালু পরিবহন না করা, সড়কে পড়ে থাকা বালু পরিষ্কার করাসহ নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।